গত ৫ আগস্ট আশুলিয়া থানার সামনে পুলিশের গুলিতে নিহত ছাত্র-জনতার লাশ পোড়ানোর ঘটনায় ‘সম্পৃক্ত’ ইন্সপেক্টর আরাফাত হোসেনকে রাজধানীর আফতাবনগর থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। র্যাব-৩ থেকে এক খুদে বার্তায় আজ শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস জানান, গত ৫ আগস্ট আশুলিয়া থানার সামনে মরদেহ পোড়ানোর ঘটনার ভিডিও দেশ-বিদেশে মানুষকে নাড়া দেয়। এতে ব্যাপক সমালোচনা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে উঠে আসে যে, এ মৃতদেহ পোড়ানোর ঘটনায় সম্পৃক্ত ছিলেন ইন্সপেক্টর আরাফাত হোসেন। এরপর আত্মগোপনে চলে যান তিনি। ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আজ রাজধানীর আফতাবনগর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ১ মিনিট ১৪ সেকেন্ডের এক ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায়- গুলিবিদ্ধ লাশ গুনে গুনে ভ্যানে তুলছেন পুলিশ সদস্যরা। পরে একটি পরিত্যক্ত ব্যানার দিয়ে সেগুলো ঢেকে দেওয়া হচ্ছে।
ভিডিওতে পুলিশের ভেস্ট আর হেলমেট পরা যাদের দেখা গেছে, তাদের একজন ঢাকা উত্তরের গোয়েন্দা পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা আরাফাত হোসেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরে আত্মগোপনে চলে যান তিনি।
সেদিন কার নির্দেশে ডিবির টিম আশুলিয়ায় দায়িত্বে ছিল জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর (ডিবি) পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, ঢাকা জেলা পুলিশের এসপি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত আব্দুল্লাহিল কাফি স্যারের নির্দেশে সেদিন তারা আশুলিয়ায় ছিলেন।
গত ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়া থানার সামনে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি ছুড়ে হত্যার রাজত্ব কায়েম করে পুলিশ। ভয়ংকর সেই দিন আর কী কী ঘটেছিল তার রোমহর্ষক বর্ণনা দেন প্রতক্ষদর্শীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, পুলিশের গুলিতে লাশের পর লাশ পড়ছিল। পরে পুলিশ ওই লাশগুলো গাড়িতে তুলে নিয়ে আগুন দেয়। লাশগুলো যেন না পুড়ে, সেজন্য পানি নিয়ে আগুন নেভাতে বের হয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের দিকেও গুলি ছোড়ে। থানার সামনে শুধু রক্ত আর রক্ত।
এদিকে আশুলিয়ায় ঘটনার মূল কারিগর সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সুপার নিউমারারি পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) আব্দুল্লাহিল কাফিকে বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) ফের পাঁচ দিনের রিমান্ডের নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। গত ২ সেপ্টেম্বর বিমানবন্দর থেকে কাফিকে আটক করে ডিবি পুলিশ।